আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার ৪ বছর পূর্ণ হলো আজ। ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট কাবুল দখলের মাধ্যমে ফিরে আসে তালেবান। তালেবান শাসনের এই চার বছরে আফগানিস্তানের অর্থনীতি এখনও পুনরুদ্ধার হয়নি, মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি, বিশেষ করে নারীদের অধিকার খর্ব হয়েছে। এ ছাড়া রাশিয়া ছাড়া এখনও তালেবান সরকারকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেয়নি কোন দেশ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট, প্রায় ২০ বছর পর কাবুল দখলের মাধ্যমে আফগানিস্তানে ফের ক্ষমতায় আসে তালেবান। আফগানিস্তানের নাম দেয় ইসলামিক এমিরেট।
তালেবান দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার পর রাজধানী কাবুলে সামাজিক ও রাজনৈতিক বেশ পরিবর্তন এসেছে। কাবুলের অনেক বাসিন্দার মতে, সেখানকার সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। আগের মতো বোমা হামলা এবং রাস্তাঘাটে সহিংসতার ঘটনা এখন তেমন একটা ঘটে না।
তবে তীব্র দারিদ্রতা, ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব ও খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন তারা। কারণ গত চার বছরে দেশটির অর্থনীতি খুব একটা ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। কৃষি, খনি, নির্মাণ ও বাণিজ্য খাত কিছুটা পুনরুদ্ধার হলেও, রপ্তানি খাতে বাধা ও সমর্থনের ঘাটটিতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশটির অর্থনীতি।
এদিকে নারীরা শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং জনজীবনে কঠোর বিধিনিষেধের মুখোমুখি হওয়ায় একসময় আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ গঠন নিয়ে আশাবাদীরা এখন হতাশ। কারণ ক্ষমতায় এসেই নারী ও মেয়েদের ওপর বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করে তালেবান। নারীদের কাজ করা বা পড়াশোনার অনুমতি নেই, জনসমাগম ও ভ্রমণেও আরোপ করা হয়েছে কড়া শর্ত। কিন্তু এসব বিধিনিষেধেও লড়াই থামাননি আফগান নারীরা। গোপনে স্কুল ও অনলাইন শিক্ষার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
জাতিসংঘ বলছে, তালেবান নারীদের দমনের জন্য বিচারব্যবস্থাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।
এই চার বছরে কোন দেশই তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। কিন্তু অবশেষে এ বছর ৪ জুলাই প্রথম দেশ হিসেবে আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া। এ ছাড়া চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ কিছু দেশ তালেবান সরকারের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক বাড়াচ্ছে। অন্যদিকে, তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি না দিলেও কূটনৈতিক সম্পর্ক বরাবর বজায় রেখেছে ভারত৷
এ ছাড়া কাতারে শ্রম রপ্তানি কর্মসূচি শুরু করেছে তালেবান সরকার। আর দেশটির পর্যটন খাতও কিছুটা পুরনরুদ্ধার হয়েছে। ২০২৪ সালে ৯০০০ পর্যটক আফগানিস্তান ভ্রমণ করেন।