ট্রাম্প-পুতিনের বৈঠক সামরিক ঘাঁটিতে কেন

আজকের মতামত ডেস্ক
সংগৃহীত ছবি: বাসস
সংগৃহীত ছবি: বাসস

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শুক্রবার আলাস্কায় উচ্চঝুঁকিপূর্ণ এক শীর্ষ বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। এটি ইউক্রেনের ভবিষ্যতের জন্য নির্ধারণী ভূমিকা রাখতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে  অ্যাঙ্কোরেজ শহরের জয়েন্ট বেস এলমেনডর্ফ-রিচার্ডসনে। এটি আলাস্কার সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি। এই ঘাঁটি স্নায়ুযুদ্ধের সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের ওপর নজরদারির জন্য ব্যবহৃত হতো। 

ইউক্রেনে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রুশ আগ্রাসনের নির্দেশ দেওয়ার পর এই প্রথমবার পশ্চিমা মাটিতে পা রাখবেন পুতিন। এ যুদ্ধে এ পর্যন্ত হাজারো মানুষ নিহত হয়েছেন।  

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৈঠক উপলক্ষে অ্যাঙ্কোরেজ শহরে নানা আয়োজন চলছে। আশপাশের সব হোটেল এখন পরিপূর্ণ, এবং যাতায়াতের জন্য ট্যাক্সি সেবা পাওয়া যাচ্ছে না বললেই চলে। ফেডারেল প্রশাসন শুক্রবার সকাল ৯টা ৩০ মিনিট থেকে পরদিন সকাল ৬টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত উড়োজাহাজ চলাচল স্থগিত করেছে।  যদিও এতে বাণিজ্যিক ফ্লাইটে বড় কোনো প্রভাব পড়বে না।

 পোপ ও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান এই অ্যাঙ্কোরেজ শহরে এসেছিলেন।  তবে রিপাবলিকান গভর্নর ডানলিভির ভাষায়, ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকই শহরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঘটনাগুলোর একটি।

 ট্রাম্পের স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ১০ মিনিটে অ্যাঙ্কোরেজে পৌঁছানোর কথা রয়েছে এবং পুতিন পৌঁছাবেন প্রায় ৫০ মিনিট পর। বৈঠক শুরু হবে আনুমানিক সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে, এরপর দুই নেতার যৌথ সংবাদ সম্মেলন বা শুধুমাত্র ট্রাম্পের সংবাদ সম্মেলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

হোয়াইট হাউসে ফেরার আগে ট্রাম্প দাবি করেন, তার পুতিনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে দোষারোপ করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শান্তি আনার প্রতিশ্রুতি দেন। ২৮ ফেব্রুয়ারির এক নাটকীয় হোয়াইট হাউস বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে প্রকাশ্যে তিরস্কার করেন ট্রাম্প। তবে পুতিন এখনো কোনো সমঝোতার ইঙ্গিত দেননি।

ট্রাম্প স্বীকার করেছেন যে পুতিনের আচরণে তিনি হতাশ, এবং যুদ্ধবিরতি না মানলে খুব কঠোর পরিণতি হবে।  তবুও তিনি আলাস্কায় দেখা করতে রাজি হয়েছেন।

ইতিহাসগত দিক থেকেও বৈঠকটি তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ ১৮৬৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার কাছ থেকে আলাস্কা কিনেছিল। মস্কো প্রায়ই ভূমি বিনিময়ের বৈধতার উদাহরণ হিসেবে এই ঘটনাকে উল্লেখ করে।

ক্রেমলিন জানিয়েছে, পুতিন ও ট্রাম্প প্রথমে শুধু দোভাষীসহ একান্ত বৈঠক করবেন, এরপর সহকারীদের সঙ্গে কর্মভোজে অংশ নেবেন।

ওয়াশিংটনভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ-এর প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ক সিনিয়র ফেলো বেঞ্জামিন জেনসেন বার্তা সংস্থা এপিকে বলেন, মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে বৈঠক আয়োজন যেকোনো প্রতিবাদ এড়াতে সাহায্য করবে। সেইসঙ্গে উচ্চমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। 

এই বিশ্লেষকের মতে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য এটি একদিকে মার্কিন সামরিক শক্তি প্রদর্শনের একটি চমৎকার উপায়। অন্যদিকে জনসাধারণ বা অন্যান্য পক্ষের হস্তক্ষেপের সুযোগ বৈঠকে থাকবে না।   

বিষয়:

আমেরিকা
এলাকার খবর

সম্পর্কিত