ঝড়ের পর পাল্টা ঝড়, হোপকে টপকে জয় ডেভিডের

আজকের মতামত ডেস্ক
সংগৃহীত ছবি: ফেসবুক
সংগৃহীত ছবি: ফেসবুক

বাইবেলের দৈত্যবধের নায়ক ডেভিড। অস্ট্রেলিয়ার টিম ডেভিডকে দেখলে যদিও গল্পের সে তরুণ নয়, গোলিয়াথের কথাই বেশি মনে পড়ে। অবশ্য আজ যে পরিস্থিতিতে পড়েছিলেন, তাতে অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডারই দৈত্যের উল্টোদিকে ছিলেন।

২১৫ রানের লক্ষ্যে পাওয়ার প্লেতেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু টিম ডেভিড ‘কঠিনেরে বাসিলেন ভালো,’ ছক্কার বন্যায় একের পর এক রেকর্ড গড়লেন। ৩৭ বলে ১০২ রানের অপরাজিত ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২১৪ তাড়া করলেন ২৩ বল হাতে রেখেই।

অথচ দিনটি হওয়ার কথা ছিল শাই হোপসের। সেইন্ট কিটসে বাংলাদেশ সময় আজ ভোরেই ক্যারিয়ারের প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন উইন্ডিজ অধিনায়ক। ব্রেন্ডন কিংয়ের (৩৬ বলে ৬২) সঙ্গে ওপেনিং জুটিতে ১২৫ রান তুলেছিলেন হোপ।

দ্বাদশ ওভারে কিং ফিরে গেলেও ইনিংস শেষেও অপরাজিত ছিলেন হোপ। দুই ওপেনার ছাড়া আর কেউ ১২ পার করতে না পারলেও অধিনায়কের সুবাদে দুই শ ছাড়ায় স্বাগতিকদের ইনিংস। ৫৫ বলে সেঞ্চুরি করা ওপেনার ৫৭ বলে ১০২ রান করেছিলেন।

তবে সেঞ্চুরির আগে মন্থর হয়ে গিয়েছিলেন। ৯২ থেকে ১০০তে পৌঁছাতে খেলেছেন ৮ বল। কিন্তু দলের রান ২০০ পেরিয়ে যাওয়ায় এ নিয়ে আর তখনো কোনো আলোচনা হয়নি। কিন্তু এক ঘণ্টা পরই হোপের ইনিংসকে অর্থহীন করে ফেলেন ডেভিড।

রান তাড়ায় ঝড় তোলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। মাত্র ৭ বল টিকলেও এর আগেই ৩ চার ও ১ ছক্কায় ২০ রান করে ফেলেন। তিনে নামা জশ ইংলিশও সে পথে হাঁটেন। ৬ বলের ইনিংসে ২ চার ও ১ ছক্কায় ১৫ করে ফিরে যান।

অধিনায়ক মিচেল মার্শ পাঁচটি চার মারলেও তাঁর ইনিংসটি ছিল শ্লথ গতির। ১৯ বলে ২২ রানের ইনিংসটি পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার এক বল আগে থামে। ৬১ রানে ৩ উইকেট হারানো অবস্থায় নামেন ডেভিড। অন্যপ্রান্তে ক্যামেরন গ্রিন কোথায় পথ দেখাবেন, উলটো চাপ বাড়ালেন। নবম ওভারে আউট হওয়ার আগে ১৪ বলে মাত্র ১১ রান করেছেন গ্রিন।

ম্যাচের ওই পরিস্থিতিতে সিরিজে স্বাগতিকদের প্রথম জয়ের সম্ভাবনাই দেখছিলেন অনেকে। কিন্তু ডেভিড ও এই সিরিজেই অভিষিক্ত মিচেল ওয়েন কিছু বুঝে ওঠার আগেই ম্যাচ শেষ করে দিয়েছেন। অবম ওভারের পঞ্চম ওভারে আউট হয়েছেন গ্রিন, ১৭তম ওভারের প্রথম বলেই ম্যাচ শেষ!

৪৬ বলের জুটিতে এসেছে ১২৮ রান। ডেভিডের কারণে আড়ালে চলে যাবেন ওয়েন, কিন্তু ১৬ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৬ রানের ইনিংসটি অন্য প্রান্ত থেকেও উইন্ডিজ বোলারদের দম ফেলতে দেয়নি।

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে মাত্র অষ্টমবারের মতো পাঁচ বা এর উপরে ব্যাট করতে নেমে ডেভিড দেখিয়ে দিয়েছেন, একটু সময় পেলে তিনি কী করতে পারেন। গ্রিন থাকা অবস্থাতেও রানরেটের গতি ঠিক রেখেছিলেন ৭ বলে ১৫ রান তুলে।

তবে ধংসাত্মক মেজাজ দেখিয়েছেন ১০ম ওভারে। গুড়াকেশ মোতিকে পেয়ে টানা চার ছক্কা মারেন। পরের ওভারে আকিল হোসেন মেরেছেন আরও দুই ছক্কা। মাঝের এক চারে ১৬ বলে ফিফটি পেয়ে যান। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে এটিই দ্রুততম ফিফটি।

ঝড় থামাতে রোস্টন চেজ এসেছিলেন, তাঁর ওভারে মেরেছেন তিনটি ছক্কা। গ্যালারির বাইরে গিয়ে আছড়ে পড়ায় আম্পায়ারদের বারবার নতুন বল আনাতে হয়েছে। ৯০ রানে ডেভিডের ক্যাচ ফেলে দেন কিং। অন্যপ্রান্তে ওয়েনও মারকাটারি ব্যাটিং করায় ভয় হচ্ছিল, প্রথম সেঞ্চুরিটা পাওয়া হচ্ছে না ডেভিডের।

জয়ের জন্য ৪ রান দরকার, এমন অবস্থায় স্ট্রাইক পান ৯৮ রানে থাকা ডেভিড। ঠিক ৪ মেরেই সেঞ্চুরিতে পৌঁছেছেন। আর তাতে গত বছর ইংলিশের ৪৩ বলে সেঞ্চুরির অস্ট্রেলিয়ান রেকর্ডটি দুইয়ে চলে গেল। ৩৭ বলে ১১ ছক্কার পাশাপাশি ৬টি চারও ছিল ডেভিডের।

এলাকার খবর

সম্পর্কিত