রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মর্মান্তিক চিত্র দেখা দিয়েছে। জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজন মারা গেছেন এবং আহত হয়ে ভর্তি রয়েছেন আরও ৪৪ জন। নিহতদের সবাই শিশু, যাদের মধ্যে সাতজন এতটাই পুড়ে গেছে যে মরদেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। দেহাবশেষ থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করে পরিচয় নিশ্চিতের চেষ্টা চলছে।
সোমবার (২১ জুলাই) বিকেলে ইনস্টিটিউটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, রাজধানীর সাতটি সরকারি হাসপাতালে মোট ৮৮ জন ভর্তি আছেন। এর মধ্যে ২৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং ৯ জন বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।
আহতদের অধিকাংশই মাইলস্টোন স্কুলের শিক্ষার্থী। এছাড়াও আহতদের মধ্যে রয়েছেন দুইজন শিক্ষক, স্টাফ এবং উদ্ধারকর্মীরা। এ ঘটনায় হাসপাতাল এলাকায় এক হৃদয়বিদারক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
আহতদের দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান অন্তর্বর্তী সরকারের একাধিক উপদেষ্টা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান আজ বিকেলে হাসপাতালে যান। এর আগে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীসহ আরও অনেকে সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
দুর্ঘটনায় আহতদের জন্য ওষুধ নিয়ে বার্ন ইউনিটে ছুটে আসেন রাষ্ট্রীয় ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল সামাদ মৃধা। তিনি খাওয়ার স্যালাইন, নিয়োমাইসিনসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় ওষুধ হাসপাতালে সরবরাহ করেন। এ সময় তিনি বলেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম ও ডা. সায়েদুর রহমানের নির্দেশনায় আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি।
বিভিন্ন দুর্যোগ ও সংকটময় মুহূর্তে এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড নিয়মিতভাবে মানবিক সহায়তায় এগিয়ে আসে, যা তাদের সামাজিক দায়িত্ববোধের পরিচয় বহন করে।
এদিকে হাসপাতালের সামনে ভিড় সামাল দিতে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিমান দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।