ব্রাজিলের সর্বনাশ করল ব্রাজিলেরই ছেলে, চেলসি ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে

আজকের মতামত ডেস্ক
সংগৃহীত ছবি: বিবিসি
সংগৃহীত ছবি: বিবিসি

সপ্তাহখানেক আগে ব্রাইটন থেকে সাড়ে ৫ কোটি পাউন্ডে চেলসিতে নাম লেখান জোয়াও পেদ্রো। শর্তসাপেক্ষে যা ৬ কোটিও হতে পারে। নতুন ক্লাবের জার্সিতে প্রথমবার মাঠে নামেন ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পালমেইরাসের বিপক্ষে। ওই ম্যাচে বদলি হিসেবে নেমে গোল না পেলেও নিজের প্রতিভার ঝলক দেখয়েছিলেন ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার। পরের ম্যাচে প্রথমবারের মতো চেলসি একাদশে সুযোগ পেয়েই বুঝিয়ে দিলেন, এত পরিমাণ অর্থ অপাত্রে ঢালেনি ইংলিশ ক্লাবটি!

টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে গতকাল মঙ্গলবার রাতে ফ্লুমিনেন্সের বিপক্ষে জোড়া গোল করেছেন পেদ্রো। ব্রাজিলিয়ান তরুণ স্ট্রাইকারের দুই গোলে ভর করে চেলসি ম্যাচটা জিতেছে ২-০ ব্যবধানে। একইসঙ্গে ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছে এনসো মারেসকার শিষ্যরা।

মজার বিষয়, পেদ্রোর ক্যারিয়ারের শুরুটা হয়েছিল ফ্লুমিনেন্সের জার্সিতে। বয়সভিত্তিক দলের গণ্ডি পেরিয়ে ২০১৯ সালে ব্রাজিলিয়ান ক্লাবটির মূল দলে ঢোকেন এ স্ট্রাইকার। পরের বছর অবশ্য ফ্লুমিনেন্স ছেড়ে পাড়ি জমান ওয়াটফোর্ডে। সেখান থেকে ব্রাইটন ঘুরে গত সপ্তাহে যোগ দেন চেলসিতে। নতুন ঠিকানায় প্রথমবার একাদশে নেমে জোড়া গোল করে বিদায়ঘণ্টা বাজালেন ফ্লুমিনেন্সের। শৈশবের ক্লাবের বিপক্ষে গোল দুটি করে উদযাপন করেননি পেদ্রো। বরং গোলের পর দুবারই হাত উঁচিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা!

ফ্লুমিনেন্সের বিদায়ের মধ্য দিয়ে এবারের ক্লাব বিশ্বকাপে স্বপ্নযাত্রা থামল ব্রাজিলের! লাতিন আমেরিকার দেশটি থেকে এবারের টুর্নামেন্টে চারটি ক্লাব অংশ নিয়ে চারটিই উঠেছিল নকআউটে। শেষ ষোলোতে বোতাফোগো ও ফ্ল্যামেঙ্গো বাদ পড়লেও পালমেইরাস আর ফ্লুমিনেন্স ওঠে কোয়ার্টার ফাইনালে। শেষ আটের লড়াইয়ে পালমেইরাস বিদায় নিলে টুর্নামেন্টে ব্রাজিলের প্রতিনিধিত্বকারী একমাত্র ক্লাব ছিল ফ্লুমিনেন্স। গতকাল ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ফ্লুমিনেন্সকে হারিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপে ব্রাজিল অধ্যায়ের সমাপ্তিরেখা টেনে দিল চেলসি।

ফিলাডেলফিয়ার লিংকন ফিনান্সিয়াল ফিল্ডে গতকাল ম্যাচের শুরু থেকে ফ্লুমিনেন্সের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছে মারেসকার দল। গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি চেলসিকে। ম্যাচের ১৮ মিনিটে বাম উইং ধরে আক্রমণে উঠে বক্সের ভেতর ক্রস করেছিলেন পেদ্রো নেতো। সেটা ঠিকঠাক ক্লিয়ার করতে পারেননি ফ্লুমিনেন্সের অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভা। বল তুলে দেনে বক্সের ঠিক বাইরে থাকা জোয়াও পেদ্রোর পায়ে।

সুযোগ পেয়ে সেটাকে কাজে লাগাতে ভোলেননি পেদ্রো। ডানপায়ের কোনাকুনি শটে দূরের পোস্টে বল জালে জড়ান ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার। ম্যাচের দ্বিতীয় গোলটাও অনেকটা একই ভঙ্গিতে করেছেন পেদ্রো। ম্যাচের ৫৬ মিনিটে মধ্যমাঠ থেকে এনসো ফের্নান্দেসের বাড়ানো বল বক্সের অনেকটা বাইরে পেয়েছিলেন। সেখান থেকে বক্সে ঢুকে ডানে কাট ইন করে ডান পায়ের জোরালো শটে স্কোরলাইন ২-০ করেন ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার। এর ৪ মিনিট পর পেদ্রোকে তুলে নেন কোচ।

মাঝে ফ্লুমিনেন্স দুবার ম্যাচে ফেরার সুযোগ পেয়েছিল। ২৫ মিনিটে হারকিউলিসের শট গোললাইন থেকে ফিরিয়েছেন কুকুরেয়া। ১০ মিনিট পর বক্সের ভেতর হাতে বল লেগেছিল চেলসি ডিফেন্ডার ত্রেভো চালোবাহর। শুরুতে পেনাল্টির বাঁশি বাজালেও ভিএআর যাচাইয়ে সেটি তুলে নেন রেফারি। এতে আর ম্যাচে ফেরা হয়নি ফ্লুমিনেন্সের। উল্টো দ্বিতীয়ার্ধে জোয়াও পেদ্রোর দ্বিতীয় গোল চেলসির জয় অনেকটা নিশ্চিত করে দেয়। ক্রিস্তোফার এনকুনকু কয়েকটি সহজ সুযোগ হাতছাড়া না করলে স্কোরলাইন আরও বড় হতে পারত!

টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আজ রাতে পিএসজির মুখোমুখি হবে রেয়াল মাদ্রিদ। এ ম্যাচ জয়ী দলের সঙ্গে আগামী রোববার রাতে শিরোপার লড়াইয়ে নামবে চেলসি।

বিষয়:

খেলা ফুটবল
এলাকার খবর

সম্পর্কিত