জুলাই-অগাস্ট আন্দোলনের সময় রাজধানীর চানখারপুলে ছয়জন নিহত হওয়ার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা চলছে। আট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তৃতীয় দিনের মতো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
বুধবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্যানেলে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। অন্যান্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এই দিন দুপুর ১২:২০ মিনিটে শহীদ মো. ইয়াকুবের মা রহিমা আক্তার সাক্ষী হিসেবে ডায়াসে ওঠেন। ছেলের মৃত্যুর বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি যাদের দায়ী মনে করেন—তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের—তাদের বিরুদ্ধে বিচার চান। বিশেষ করে শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরের নাম উল্লেখ করে তার বিচার দাবি করেন।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন মিজানুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর ফারুক আহামেদসহ অন্যান্যরা।
এর আগে, ১২ আগস্ট দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণে চানখারপুলের ঘটনা নিয়ে জবানবন্দি দেন আঞ্জুয়ারা ইয়াসমিন ও শেখ জামাল হাসান। এছাড়া, আসামিপক্ষের আইনজীবীরা সাক্ষীদের জেরা করেন।
সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম দিন, ১১ আগস্ট, শহীদ আনাসের বাবা সাহরিয়া খান পলাশ নিজের ছেলের হত্যার জন্য দায়ীদের ফাঁসি চেয়ে সাক্ষ্য দেন।
এ মামলার চার আসামি—সাবেক শাহবাগ থানার ওসি (অপারেশন) মো. আরশেদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন মিয়া, মো. ইমাজ হোসেন ইমন ও মো. নাসিরুল ইসলাম—এদিন কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির ছিলেন।
২০১৪ সালের ১৪ জুলাই ট্রাইব্যুনাল এই মামলার চার পলাতক আসামিসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। মামলায় দাখিলকৃত অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট চানখারপুলে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ গুলি চালায়, এতে শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদী হাসান জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়া শাহরিক নিহত হন।