আগে যেখানে ঘুষ দিতে হতো ১ লাখ টাকা, এখন সেখানে ঘুষের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ টাকা— এমন অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “সুশাসন ও নিয়ন্ত্রণহীনতার কারণে দেশে দুর্নীতির মাত্রা ভয়াবহভাবে বেড়ে গেছে। আগে ঘুষ লাগত ১ লাখ, এখন লাগে ৫ লাখ। পুলিশের আচরণেও কোনো পরিবর্তন আসেনি— বরং তারা আরও সুযোগ নিচ্ছে।”
‘অর্থনীতিঃ শাসন ও ক্ষমতা’ শিরোনামের একটি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে বক্তারা বর্তমান সরকারের সময়ে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট এবং কর্তৃত্ববাদী শাসনের চিত্র তুলে ধরেন।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিবর্তনে এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। আমরা দেখেছি কীভাবে কর্তৃত্ববাদী শাসন জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে পদদলিত করেছে এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্বল করেছে।
সাবেক বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও বর্তমান অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, গত আগস্টে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর দেখা গেছে, ব্যাংক খাতের প্রায় ৮০ শতাংশ অর্থ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, যা বিশ্বের ইতিহাসে নজিরবিহীন।
তিনি বলেন, পৃথিবীর আর কোথাও এমন অর্থনৈতিক বিপর্যয় আমি দেখিনি। ধরুন, ২০ হাজার কোটি টাকা আউটস্ট্যান্ডিং, তার মধ্যে ১৬ হাজার কোটি টাকাই অনুপস্থিত। চেয়ারম্যান সাহেবরা এই অর্থ নিয়ে গেছেন।
অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, সরকারে জবাবদিহিতার অভাব এবং দুর্বল নিয়ন্ত্রণব্যবস্থার কারণে দুর্নীতিবাজরা এখন আরও বেপরোয়া। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।
বক্তারা বলেন, দেশের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর যথাযথ তদারকি না থাকায় অর্থনৈতিক লুটপাটকারীরা সুবিধা নিচ্ছে। গণতান্ত্রিক উপায়ে জনগণের সত্যিকার প্রতিনিধি নির্বাচিত করে সংসদে পাঠানোর মধ্য দিয়েই এ সংকটের সমাধান সম্ভব বলে মত দেন তারা