রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে এখন পর্যন্ত ১৯ জন নিহত এবং অন্তত ৫০ জন আহত ও দগ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের অধিকাংশই শিক্ষার্থী বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল সাংবাদিকদের জানান, ধ্বংসস্তূপ থেকে এখন পর্যন্ত ১৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত ও দগ্ধ অবস্থায় অন্তত ৫০ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান বলেন, সেখানে এ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক আহত ভর্তি হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই স্কুলের শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে একজন নিহত হয়েছেন এবং বাকিদের অবস্থা গুরুতর।
আইএসপিআরের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি ‘এফ-৭ বিজেআই’ প্রশিক্ষণ বিমান সোমবার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাইলস্টোন স্কুলের একটি অ্যাকাডেমিক ভবনের ওপর ভেঙে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায় এবং পুরো এলাকা ধোঁয়ায় ঢেকে যায়।
ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। উত্তরা, টঙ্গী, পল্লবী, কুর্মিটোলা, মিরপুর ও পূর্বাচল ফায়ার স্টেশন থেকে ইউনিটগুলো পাঠানো হয়।
স্কুলের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহ বুলবুল জানান, বিমানটি স্কুলের একটি অ্যাকাডেমিক ভবনের প্রবেশদ্বারে আছড়ে পড়ে। ওই সময় ভবনটিতে ক্লাস চলছিল, ফলে আগুন ও ধ্বংসস্তূপে অনেক শিক্ষার্থী দগ্ধ হন।
এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি হওয়া আহতদের মধ্যে আছেন: শামীম ইউসুফ (১৪), মাহিন (১৫), আবিদ (১৭), রফি বড়ুয়া (২১), সায়েম (১২), সায়েম ইউসুফ (১৪), মুনতাহা (১১), নাফি, মেহেরিন (১২), আয়মান (১০), জায়েনা (১৩), ইমন (১৭), রোহান (১৪), আবিদ (৯), আশরাফ (৩৭), ইউশা (১১), পায়েল (১২), আলবেরা (১০), তাসমিয়া (১৫), মাহিয়া, অয়ন (১৪), ফয়াজ (১৪), মাসুমা (৩৮), মাহাতা (১৪), শামীম, জাকির (৫৫), নিলয় (১৪), সামিয়া প্রমুখ।
বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় সরকার আগামীকাল মঙ্গলবার একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। এদিন সব সরকারি, বেসরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিদেশে বাংলাদেশ মিশনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। এছাড়া, মসজিদ, মন্দির, গির্জাসহ সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে আহত ও নিহতদের জন্য বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।