পাঁচটা উইকেট হাতে ছিল শেষ পর্যন্ত। এর বাইরে পাল্লেকেলেতে গতকাল সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ইনিংসের আর কোনো ইতিবাচক দিক সম্ভবত জোর করেও খুঁজে বের করা সম্ভব নয়। পাওয়ার প্লে-তে পারভেজ হোসেন ইমনের দারুণ শুরুর পরও শেষ পর্যন্ত ১৫০ পেরোতেই যে দলের শামিম পাটওয়ারির ৫ বলে ১৪ রানের ক্যামিওর দরকার পড়েছে, সে দলের ইনিংসে টি-টোয়েন্টিসুলভ কিছু খুঁজে পাওয়া দায়।
শ্রীলঙ্কাকে ১৫৫ রানের লক্ষ্য দিয়ে বাংলাদেশ যদি বল হাতে লড়াই করার কিঞ্চিত আশা দেখে থাকেও-বা, সেটা মিটিয়ে দিতে শ্রীলঙ্কার পাওয়ার প্লে-র বেশি লাগল না! ততক্ষণেই যে ম্যাচের ভাগ্য নিয়ে অনিশ্চয়তা শেষ! অনেকটা রিকশার গতিতে এগোনো বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ইনিংসের বিপরীতে শ্রীলঙ্কা যে ছুটেছে স্পোর্টস কারের গতিতে!
পাওয়ার প্লে-র ৬ ওভারেই ৮৩ রান তুলে ফেলেছে শ্রীলঙ্কা! তাতে রেকর্ডও হয়ে গেছে - আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে পাওয়ার প্লে-তে এটাই শ্রীলঙ্কার সর্বোচ্চ রান। আগের রেকর্ড ছিল ৭৫ - ভারতের বিপক্ষে ২০১৮ সালে। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা হেসেখেলে ৭ উইকেটে জিতেছে। ব্যাটিংয়ে ৫ উইকেট হাতে রাখার মতো বাংলাদেশের বোলিংয়ের ‘প্রাপ্তি’ – শ্রীলঙ্কাকে ১৯তম ওভারের শেষ পর্যন্ত ব্যাট করতে হয়েছে। আরেকটা ‘প্রাপ্তি’ হতে পারে এই যে, দশম ওভারের তৃতীয় বলের পর থেকে ১৬তম ওভারের প্রথম বল পর্যন্ত ৩৪ বলে লঙ্কানদের কোনো বাউন্ডারি পেতে দেয়নি বাংলাদেশ!
অবশ্য ওই ৩৪ বলের আগে যেমন চার-ছক্কার বৃষ্টি গেছে, সেটার সামনে বাংলাদেশজুড়ে গত কয়েক দিনের বৃষ্টিও তুলনায় ম্লান হয়ে যায়। ইনিংসের প্রথম তিন বলেই সাইফউদ্দিনকে টানা তিন চার মেরে শুরু পাতুম নিশাঙ্কার, সেখান থেকে ইনিংসের ২৮তম বলে নিশাঙ্কার বিদায়ের আগ পর্যন্ত ২৭ বলেই শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার চার মেরেছেন ৮টি, ছক্কা ৪টি।
পাওয়ার প্লে-র ৬ ওভারের প্রতিটিতেই দুই অঙ্কে রান তুলেছে শ্রীলঙ্কা। মাঝে পঞ্চম ওভারে মিরাজের বলে পাতুম নিশাঙ্কা ফিরেছেন বটে, তবে ততক্ষণেই তাঁর নামের পাশে ১৬ বলে ৫ চার ৩ ছক্কায় ৪২ রান। তিনে নামা কুশাল পেরেরার ব্যাটিংটা হলো বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মতো – ১৩তম ওভারে রিশাদের বলে মারতে গিয়ে আকাশে তুলে দিয়ে লিটনের হাতেই ক্যাচ হয়ে ফেরা কুশাল ২৫ বলে করেছেন ২৪ রান।
তবে ওসব নিয়ে শ্রীলঙ্কার তখন আর দুর্ভাবনার লেশমাত্রও থাকার কিছু ছিল না। ওপেনার কুশাল মেন্ডিস আরেক প্রান্তে পাতুম নিশাঙ্কার বিদায়ের পর থেকেই কোনো বাউন্ডারি মারতে না পারলেও এক প্রান্ত যে আগলে রেখেছিলেন। পঞ্চম ওভারে নিশাঙ্কা আউট হওয়ার সময়েও মেন্ডিসের রান ছিল ১২ বলে ৩ চার ৩ ছক্কায় ৩৫, শেষ পর্যন্ত আর চার-ছক্কা মারতে না পারলেও ১৮তম ওভারে সাইফউদ্দিনের বলে মেন্ডিস যখন আউট হচ্ছেন, শ্রীলঙ্কার জয়ের জন্য দরকার ১৬ বলে ৭ রান।