জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, গোপালগঞ্জে দলটির পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে তাঁরা কোনো যুদ্ধ বা সংঘাতের আহ্বান নিয়ে যাননি। তিনি জানিয়েছেন, ভবিষ্যতেও গোপালগঞ্জের প্রতিটি উপজেলা ও গ্রামে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
বৃহস্পতিবার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক দীর্ঘ পোস্টে এসব মন্তব্য করেন তিনি। এর আগের দিন, বুধবার এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে সংঘর্ষে চারজন নিহত হন। সংঘর্ষে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মীদের সংঘর্ষ হয় বলে দাবি করেন নাহিদ ইসলাম।
ফেসবুক পোস্টে নাহিদ ইসলাম লিখেছেন, গোপালগঞ্জ নিয়ে আমাদের অবস্থান আগেই স্পষ্ট করেছি। বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলের মতো গোপালগঞ্জও আমাদের প্রতিশ্রুতির আওতায়। সেখানে রাজনৈতিক বৈষম্যের বিরোধিতা করছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা গোপালগঞ্জ ও পুরো বাংলাদেশকে মুজিববাদী সন্ত্রাস ও ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত করতে চাই। আওয়ামী লীগ যুগের পর যুগ এই অঞ্চলের মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে, মুক্তিযুদ্ধকে কলুষিত করেছে এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি অবিচার করেছে।
নাহিদ ইসলাম দাবি করেন, আমরা কোনো যুদ্ধের আহ্বান নিয়ে যাইনি। আমাদের কর্মসূচি ছিল শান্তিপূর্ণ। কিন্তু মুজিববাদী সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে, ঠিক যেমনটা জুলাই গণঅভ্যুত্থানেও হয়েছিল।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, \প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে এখনও ফ্যাসিবাদের দোসর ও দুর্নীতিবাজরা সক্রিয়। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গোপালগঞ্জে এনে সংঘর্ষে লাগানো হয়েছে।”
নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা গোপালগঞ্জে পদযাত্রা করিনি, বরং নিরাপত্তা বাহিনীর নির্দেশনা অনুযায়ী একটি পথসভা করেছি। নানা বাধা সত্ত্বেও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ করেছি। পরে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।
তিনি দাবি করেন, আমরা চারজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে আমরা বিশ্বাস করি না এবং তার প্রতিবাদ করি। প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থা সময়মতো ব্যবস্থা নিলে এই রক্তপাত এড়ানো যেত।
পোস্টের এক পর্যায়ে তিনি লেখেন, আমরা আবারও গোপালগঞ্জে যাব। জীবিত থাকলে গোপালগঞ্জের প্রতিটি উপজেলায়, প্রতিটি গ্রামে কর্মসূচি করব। শহীদের রক্তের শপথ নিয়ে বলছি, মুজিববাদকে গোপালগঞ্জ ও বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়াতে দেব না।
তিনি আরও বলেন, মকসুদপুর ও কোটালীপাড়ায় আমাদের শহীদদের কবর রয়েছে। এই ভূমি আমরা মুজিববাদীদের হাতে তুলে দেব না। বাংলাদেশ কারও পৈতৃক সম্পত্তি নয়—এটা জনগণের।