জিলহজ। আরবি বছরের শেষ মাস। হজ ও কুরবানির ঈদের মাস। ২৮ মে বুধবার সন্ধ্যায় মিষ্টি হাসি দিয়েছে জিলহজের নতুন চাঁদ। অনেকটা নীরবেই আমাদের মাঝে এসে গেছে আমলের গুরুত্বপূর্ণ মাসটি।
Advertisement
সূর্যের অস্ত উদয় হিসেবে এই মাসও অন্য মাসের মতো। তবে সম্মানের বিচারে জিলহজের রয়েছে অনন্য উচ্চতা।
এই মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত বুঝাতে স্বয়ং আল্লাহ তাআলা জিলহজের প্রথম দশকের কসম খেয়েছেন। নবীজিও জিলহজের শ্রেষ্ঠত্বের ঘোষণা দিয়েছেন।
এক হাদিসে প্রিয় নবীজি ইরশাদ করেন -মনে রেখো! জিলহজ হলো সবচেয়ে সম্মানিত মাস। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস নং ১১৭৬২)
জিলহজের প্রথম দশক বিপুল মর্যাদা ও ফজিলতের দশক। বছরের সেরা দশক। অন্য সময়ের তুলনায় এই দশকের ইবাদত অনেক দামি। আল্লাহর কাছে অতি পছন্দনীয় এবং প্রিয়।
এই দশকে অল্প ইবাদতেও আল্লাহর রহমত এবং সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব। অথচ অন্য মাসে জান মাল বিলিয়ে দেওয়া ছাড়া এই দশকের সমান মর্যাদা লাভ করা যায়।
এক হাদিসে প্রিয় নবীজি বলেন, জিলহজের প্রথম দশ দিনের আমল আল্লাহর কাছে যত প্রিয়, অন্য কোনো সময়ের আমল তত প্রিয় নয়। সাহাবায়ে কেরাম প্রশ্ন করলেন, আল্লাহর পথে জিহাদও কি এর চেয়ে প্রিয় নয়?
নবীজি বললেন, না, আল্লাহর পথে জিহাদও এই দশ দিনের নেক আমলের চেয়ে বেশি প্রিয় নয়। কিন্তু ওই ব্যক্তির কথা ভিন্ন, যে নিজের জান মাল নিয়ে জিহাদে বেরিয়ে যান এবং কোনো কিছু নিয়ে আর ঘরে ফিরে আসেনি। (সহিহ বুখারি: হাদিস নং -৯৬৯)
আরও পড়ুন
Advertisement
- যেভাবে ওমরাহ পালন করবেন, ধারাবাহিক নিয়ম ও দোয়া
- কুরবানির প্রয়োজনীয় যত মাসয়ালা
- মক্কার ঐতিহাসিক কয়েকটি স্থান
জিলহজের প্রথম দশকের শ্রেষ্ঠত্বের ঘোষণা করেছেন জগতের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ। এক হাদিসে নবীজি ইরশাদ করেন -জগতের সর্বোত্তম দিন হলো জিলহজের প্রথম দশ দিন। (মুসনাদে বাযযার- হাদিস নং-১১২৭)
সবাই সবকিছুতে সেরা তালাশ করে। বাড়তি মূল্যায়ন করে।এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বছরের সেরা এই দিনগুলোর মূল্যায়ন করে কয়জন?
পরকালীন পুঁজি সংগ্রহের সুবর্ণ এই সময়কে আমলে আমলে কাটাতে হবে। ঈমান আমলের আলোয় জীবনকে করতে হবে সমৃদ্ধ ও আলোকিত।
এ দশকে যে কোনো ধরনের নফল আমল করা যায়। নির্ধারিত কোনো নিয়ম বা সংখ্যা নেই। তবে রোজা রাখা উত্তম। সম্ভব হলে নয়টি রোজা রাখা। কেননা নবীজি এই নয় দিন রোজা রাখতেন।
হযরত হাফসা (রা.) থেকে বর্ণিত। চারটি আমল নবীজি কখনো ছাড়তেন না। আশুরার রোজা, জিলহজের প্রথম দশকের রোজা। (সুনানে নাসায়ী: হাদিস নং - ২৪১৫)
অপর এক হাদিসে বর্ণিত, নবীজি জিলহজের নয়টি রোজা রাখতেন। (মুসনাদে আহমদ: হাদিস নং-২২৩৩৪)
কিন্তু জিলহজের এই দশক আমাদের কাছে অতটা গুরুত্ব পায় কি?
জিলহজের প্রথম দশকের গুরুত্ব ও মহিমা সবার উপলব্ধিতে আসুক। সৌভাগ্যের এবং ইবাদতের এই সুবর্ণ সময়ে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ুক আমলের সৌরভ।
লেখক: শিক্ষক, শেখ জনূরুদ্দীন রহ. দারুল কুরআন চৌধুরীপাড়া মাদরাসা, ঢাকা- ১২১৯