মাদ্রাসায় ফের চালু হচ্ছে বৃত্তি, পরীক্ষা ডিসেম্বরে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
সংগৃহীত ছবি: ফেসবুক
সংগৃহীত ছবি: ফেসবুক

প্রাথমিকের পর মাদ্রাসার ইবতেদায়ি পর্যায় এবং অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষে এ পরীক্ষাগুলো অনুষ্ঠিত হতে পারে।

মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, মোট ছয়টি বিষয়ে পাঁচটি পত্রে এবারের বৃত্তি পরীক্ষা আয়োজিত হবে। কোরআন মজিদ এবং আকাইদ ও ফিকহ, আরবি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র, বাংলা, ইংরেজি এবং গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ের পরীক্ষা হবে। গণিত ও বিজ্ঞান পরীক্ষা এক পত্রে হবে। প্রতিটি পত্রের নম্বর হবে ১০০। সর্বশেষ ২০০৮ সালে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ইবতেদায়ি পর্যায়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা।

সূত্র আরও জানায়, আগামী ২১, ২২, ২৩, ২৪ ও ২৮ ডিসেম্বর এ পাঁচটি পত্রের পরীক্ষা আয়োজনের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আর বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড অনুমোদিত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা ও দাখিল মাদ্রাসার সঙ্গে সংযুক্ত ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলোর পঞ্চম শ্রেণির সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী এ বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে।

সব তথ্য নিশ্চিত করে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, বৃত্তি পরীক্ষার বিস্তারিত পাঠ্যক্রম ও মানবণ্টন শিগগির প্রকাশ করা হবে।

এর আগে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর জানায়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পিটিআইসংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয় ও সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী চলতি বছরের বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে। তবে কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে না।

জানা যায়, চলতি বছরের ২১ ডিসেম্বর থেকে ২৪ ডিসেম্বর প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। পাঁচ বিষয়ে চার পত্রে মোট ৪০০ নম্বরের এ পরীক্ষা হবে। বাংলা, ইংরেজি ও গণিতে ১০০ নম্বর করে মোট ৩০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। আর বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে ৫০ এবং প্রাথমিক বিজ্ঞান বিষয়ে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা হবে একসঙ্গে। প্রতিটি পত্রের পরীক্ষা হবে আড়াই ঘণ্টার।

জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রশাসন শাখার সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, বৃত্তি পরীক্ষার বিষয়ে ইতিমধ্যে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের ‘অবহিতকরণ পত্র’ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

একসময় প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার রেওয়াজ থাকলেও ২০০৯ সালে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষা বন্ধ করে চালু করা হয় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা। পরে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ফের ‘পরীক্ষামূলকভাবে’ প্রাথমিকে বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়। ওই ফলাফলের ভিত্তিতে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে বৃত্তির জন্য নির্বাচিত ৮২ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হয়। তাদের মধ্যে ৩৩ হাজার জন ট্যালেন্টপুলে (মেধাবৃত্তি) এবং ৪৯ হাজার ৩৮৩ জন সাধারণ বৃত্তি পায়।

এদিকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে এ পরীক্ষায় বাছাই করা নির্দিষ্টসংখ্যক শিক্ষার্থী অংশ নিতে পারবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

জানতে চাইলে মাউশি পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক ড. খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল বলেন, এ বিষয়ে (জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা) একাধিক সভা হয়েছে। শিগগির এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে।

জানা যায়, ২০১০ সালের আগে পৃথকভাবে জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া হতো। পরে চালু করা হয় জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা। কিন্তু ২০২০ সালে করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে জেএসসি পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখার বিবেচনায় আর এ পরীক্ষা নেওয়া হয়নি।

বিষয়:

শিক্ষা
এলাকার খবর

সম্পর্কিত